লেখক :- দন্ত-স রানা
ঝড়া পাতা ঝরার আগেই
যে গাছ উপড়ে যায় সমুলে
ভ্রণতেই হয়ে যায় শেষ
কাঁদো অনিমেষ! কাঁদো বার বার
যে কুঁড়ি মাখেনি আলো!
দেখেনি জোস্নার ফুল
বোমার শব্দ শূনেছে কেবল
গেঁথেছে আর্তনাদের বিষহূল
পাখির কলতান নেই আর
দেখেছে মৃত্যুর হুলস্থুল।।
বক ধার্মিক আর ভূঁইফোড়ের দলে
যে সবুজের কুড়ি নষ্ট হয় অকালে
তার সবই দেখি, দেখে সবাই গাজায় তাকালে
যেন মৃত্যু এসেছে নেমে পাহাড়ী ঢলে।।
একটি তাজা গোলাপ থেকে যে রক্ত ঝরে পড়ে
তার ভার কেউ নিতে পারে না।
অথচ বাবার হাতে, মায়ের বুকে সবুজ চারাগাছ
আর হাওয়ায় ধুলছে না, বুকের বেলুন আর ফুলছে না
স্রোতিস্বিনীর বিলাপ কতটুকুই জানো তোমরা?
অথচ ইট শুড়কি পলেস্তেরায় সতেজ প্রানের ঘ্রাণ
তাজা তাজা রক্তের দাগ মুছে ফেলা যায় না
তবু যুগে যুগে ছায়া রেখে যায় মানুষরুপি হায়েনা।
আকাশে ফিনিক্স পাখি, মাটিতে শিশুর প্রান
যে দরজা নিমিষে বন্ধ হচ্ছে কেবল
তোমরা কি শুনেছো সেই কষ্টের গান?
দরজার ওপাশেই ভীত সন্ত্রস্ত মুয়জ্জিনের আযান।।
নিঃশব্দে গাঢ় অন্ধকারে প্রার্থনা কেবল
রকেটের আলো ছাড়া নেই কোনো আলো
বাকিসব ধোঁয়া ধোঁয়া বিষ্ফোরিত কালো ।
বোমার শব্দে মরার আগে গাজার প্রান জাগে
আর সব ধূসর, শুধুই আগুন, জলসানো লাগে।
স্মৃতির শহর হারিয়ে যাচ্ছে হায়! হইতেছে বিলিন
শহীদের রক্তের কাছে শুধূ এই পৃথিবীর বাড়িতেছে ঋন।
অশ্রুর মত রক্তের যে কনা মিলে যায় শুন্যে
বয়সি বৃক্ষ কি সহজেই রেখে দেয় তার গহীন অরন্যে
মাটিও রাখে ভাজে ভাজে ছোট ছোট প্রাণ পাহার সমান গভীরে নির্জনে
অথচ তুমি আমি শিস দিয়ে দিয়ে যাই সাদর সম্ভাষণে।
খোলা জানালায় নিকষ আধাঁর
মৃত্যু ঝুলে আছে কার্নিশে
কারাগারে শ্বাস নেই
বদ্ধ ধমে স্প্রিন্টার মিশে যায় নিমিষে
তবু বুকের জমিনে উড়ুক স্বাধীন পতাকা
ওরা শহীদ ওরা গাজি
মানুষের মতই বেহেশতের বাজি
উড়ে উড়ে মিশে যায় আকাশে
বুক পেতে দিয়ে আছে ওরা
মৃত্যুকে ভালবেসে।
যে দরজার কপাটে লেগেছিল মায়ের হাত বাবার পদধ্বনি
সে দরজার বাইরে এখন দোযখের লেলিহান শিখা
শত নিষ্পাপ প্রাণের ক্রন্দন শুনি।
আল-আহলি হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর প্রহর গুনছিল যারা
সেখানেও তোমাদের ফিনিক্স পাখি বাতাসে ছড়িয়ে দিয়েছে সাহারা।
নিয়েছে কেড়ে স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রাণ
সেখানে কেবল লাশের মিছিল,
শিশুর আর্তনাদ, আর রক্তের বান।
তবে কি স্বাধীনতা মানে শঙ্খনীল কারাগার?
নিজ ভূমে থেকে মৃত্যুর প্রহর গোনা
স্বাধীনতা মানে রক্তে রঞ্জিত প্রতিটি ধূলিকনা
নাকি স্বাধীনতা মানে নিজ ভুমে থেকেই উদ্বাস্তু যাযাবর?
স্বাধীনতা মানে রক্তের হলি,
রক্তের দামে জমীন স্থাবর -আস্থাবর।
স্বাধীনতা মানে কি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের বিলাপ কীট পতঙ্গ সম!
নাকি স্বাধীনতা মানে শত কোটি নিষ্পাপ লাশের মিছিল
এক সমুদ্র রক্ত ঝরা শেষে কেটে যাবে তোমাদের ভ্রম!
রক্ত, পূঁজ, ক্ষত মারিয়ে অগনিত মানুষের সারি
প্রলম্বিত হাত বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে দেখে খাবার, জলের গাড়ি
ফাঁকা শহর গলি থেকে ভেসে আসে প্রেতাত্বার হাসি
কুকুরও চমকে উঠে, সবুজ রঞ্জিত লালে
হে ঈশ্বর এর শেষ কোথায় কবে
তোমার সন্তানেরা নিশ্চিত নিরাপদে ঘুমাবে
আধাঁর শেষে ভোরের আলোয়
তোমার জমিনে
তোমার পায়ে মাথা নুয়াবে।
Leave a Reply