শামিউল হক শামীম , তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে টানা তীব্র তাপদাহে ও লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা ভীষণ অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন।
বিশেষ করে তীব্র রোদের তাপের কারণে দিনমজুর, রিকশা চালকরা কাজ করতে পারছেন না। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকানেও ভিড় জমিয়ে তৃৃষ্ণা মেটাচ্ছেন অনেকে।
রবিবার (২৮) দুপুর সাড়ে ৩টায় উপজেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রচন্ড গরমে ঘামে ভিজে জর্জরিত হয়ে কোমল পানীয়, লেবুসহ বিভিন্ন শরবত ভাসমান দোকানের দিকে ছুটছেন পথচারী। আবার অনেকে দেখা গেছে হাঁটার পথে কিংবা রাস্তার আশপাশে একটু ছায়া পেলেই গরম থেকে বাঁচার জন্য দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।
মোটরসাইকেল চালক বাবলু বলেন, বৈশাখের এই তীব্র রোদের কারণে মোটরসাইকে চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষও কম বের হচ্ছে। তাই গাছের নিচে বসে আছি।
উপজেলার লাউশন গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ঠিকমতো কাজে যেতে পাচ্ছি না। গরমে কাজ করতে না পেয়ে আয় কমে গেছে। আগে দিনে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যেত। এখন প্রচন্ড গরমের কারণে সারা দিনে ২৫০ টাকা আয় করা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
অটোভ্যান চালক সুলতান বলেন, প্রচন্ড গরম আর রোদের কারণে অটোভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে তেমন যাত্রীও মিলছে না। তারপরও পেটের দায়ে রিকশা চালাচ্ছি। আর পারতাছি না, কবে যে বৃষ্টি দিব আল্লাহ। ৩০০ টাকা সারা দিনে ইনকাম করলে ৫০ টাকার স্যালাইন ও শরবত খাইতে হয়।
তাড়াশ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক আবু হাশিম খোকন বলেন, তীব্র তাপদাহে পুড়ছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা। আবার যে গরম এই গরমে বাসায় বিদ্যুৎ থাকে না। বাসায় ছোট-ছোট বাচ্চা আছে। দীর্ঘ সময়ের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ আমরা।
চাহিদা অনুযায়ী মেগাওয়াট না পাওয়ার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তাড়াশ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নিরাপদ দাস। তিনি বলেন, আমার এরিয়াতে ২৬ মেগাওয়াটের চাহিদা রয়েছে। তবে আমরা ১৭ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। চাহিদামতো না পাওয়ায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সময় লোডশেডিং হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় রবিবার সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়া বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব কম।
Leave a Reply