এম দুলাল উদ্দিন আহমেদ,সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া নতুনপাড়ায় সাংবাদিকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতা কামাল হোসেনসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব-১২ সদস্যরা। এ নিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিনজনে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৭টার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সয়াধানগড়া মহল্লায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাসা থেকে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সয়াধানগড়া মহল্লার মৃত আনছার আলীর পুত্র কামাল হোসেন (৩৫) ও লুৎফর রহমান লুতুর ছেলে ইমরান হোসেন (২২)। এসময় তাদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এর আগে গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক কলম সৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদের বাসভবনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক ব্রজেশ্বর বর্মন এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, সাংবাদিকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী কামাল হোসেন ও আরেক আসামী ইমরান হোসেনকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব-১২ সদস্যরা। পরে সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে সদর থানায় হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে তাদেরকে সিরাজগঞ্জ আদালতের সোর্পদ্দ করলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উপ-পরিদর্শক আরও জানান, হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত অস্ত্রধারী গাফফার শেখকে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয়। তাকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারসহ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২ সদর কোম্পানীর মিডিয়া অফিসার (সহকারী পুলিশ সুপার) মোঃ উসমান গণি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সয়াধানগড়া মাছুমপুর ঈদগাহ মাঠে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক আব্দুল হামিদের দুই ভাগনে মো. রানা আহমেদ (২৫) ও ঐশ্বর্য শেখের (২১) কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরের দিকে সয়াধানগড়া মহল্লার কিশোর গ্যাংয়ের লিডার কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের সন্ত্রাসী গ্রুপ রামদা, ছুরি, লোহার রড, লাঠি ইত্যাদি দেশি অস্ত্র নিয়ে আব্দুল হামিদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে শক্তির মহড়া প্রদর্শন করে। তারা আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর করে। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ সময় সাংবাদিক হামিদের স্ত্রী সাফিয়া খাতুন, বোন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাহেলা খাতুন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহেলা বেগম এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট এবং অস্ত্র উঁচিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায় অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় রাতে সাংবাদিক আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,দীর্ঘদিন ধরে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সয়াধানগড়ায় নতুন নতুন বসতিদের বাড়ীঘর নির্মাণে তাদের নিকট থেকে চাঁদাবাজি করারও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তাদের কারণে এলাকাবাসীরা আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
Leave a Reply