আলী আশরাফ,সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জে অসংখ্য শিশু আছে যারা বিভিন্ন ঝুঁকিপুর্ন কাজে নিয়োজিত। এদের মধ্যে অনেক শিশু স্কুলে গিয়ে ঝড়ে পড়েছে, আবার অনেক শিশুর স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি। শ্রমজীবি শিশুরা নিয়মিত স্কুলে আসে না এবং যা শেখে তাও ভুলে যায়। এমনকি পথ শিশুরা স্কুল গেলে টাকা উপার্জন করতে পারে না। টাকা উপার্জন না করল মা-বাবা মারধর সহ বোকাবকি ও ভাতও খেতে দেয় না এমন শিক্ষার্থীদের নিয়ে সিরাজগঞ্জের ৩নং ক্রসবাঁধে চরমালসাপাড়ায় গড়ে উঠেছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শ্রমজীবি শিশুদের শিক্ষা করতে ‘শিক্ষামূলক ব্যাগ’ ব্যবহার শিক্ষা প্রদান করা হয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, স্কুলের অর্ধেকেরও বেশী শিশু শিক্ষার্থী নানা ঝুকিপুর্ন কাজে নিয়োজিত। এদের পরিবার অত্যান্ত দরিদ্র হওয়ায় প্রতিদিন তাদের কাজে যেতে হয়। এই শিশুদের কিভাবে স্কুলের বাইরেও পড়াশোনা মনে রাখাতে পারে, এজন্য একটি বিশেষ ব্যাগ তৈরি করা হয়েছে। শিশুরা যখন বিভিন্ন পন্য রাস্তা থেকে কুড়াতে যায়, তখন তারা এই চটের ব্যাগটি ব্যবহার করে। এই ব্যাগের সাথে ক্লাসে শেখানো বর্নমালাগুলো সংযুক্ত করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ৩নং ক্রসবাঁধ এলাকায় ৬-১৩ বছরের শ্রমজীবি শিশু বর্ণমালা শিখানো জন্য গড়ে উঠেছে ‘জয়ফুল লার্নি স্কুল’। ঝড়ে পড়া, স্কুলে শিশুরা ভর্তি হতে পারেনি, শ্রম বিক্রি করছে ৬-১২বছরেরর শিশুদের দেখা মিলে এই স্কুলে। মোট শিক্ষার্থী ২৫জনের মধ্যে ১১জন শ্রম বিক্রি করে আসছে। শ্রমজীবি শিক্ষার্থী ১১জন সপ্তাহে ২দিন ক্লাস হচ্ছে। বাকিরা অন্য অন্য শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ৫দিন ক্লাস করছে। শ্রমজীবি শিশুদের শিক্ষামূলক ব্যাগ ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে বর্ণমালা শিখাচ্ছে মাহমুদা খাতুন হয়। শিক্ষামূলক ব্যাগ তারা তাদের কাজের সময় নিয়ে যায়। সপ্তাহের অন্য অন্য দিন শিক্ষামূলক ব্যাগ দেখে সহজেই বর্ণমালা শিখতে পারছে।
স্কুলের শিক্ষার্থী সোহান মোল্লা বলেন, স্কুল করলে টাকা উপার্জন করতে পারি না। টাকা উপার্জন না করলে মা-বাবা মারধর করে, খেতেও দেয় না। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের কাজে যেতেই হবে। এখানে আমরা সপ্তাহে ২ দিন ক্লাস করি। যে জিনিসগুলো শিখি তা যাতে মনে রাখতে পারি, এজন্য ম্যাডাম আমাদের বিশেষ একটি ব্যাগ দিয়েছে। এতে করে আমরা পড়া ভুলি না।
জানা যায়, গ্লোবাল ফান্ড ফর চিল্ড্রেন এর সহযোগিতায় উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট ফর ডিজএ্যাডভান্টেজড পিপল (ডিডিপি)।
ডিডিপি’র নির্বাহী পরিচালক কাজী সোহেল রানা বলেন, কর্মজীবি শিশুদের জন্য আমরা একটি মডেল তৈরি করেছি, যাতে অন্যরা এটিকে অনুসরণ করতে পারে। শিশুরা কাজে গিয়েও শিখছে।
Leave a Reply