আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জঃ
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৭ আগষ্ট) দুপুর ১ টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহিদ এ. কে. শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনের সভাপতিত্ব করেন, জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
এসময়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ সিরাজগঞ্জের উপপরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি, উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ) মোঃ রায়হান কবির, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রিদওয়ান আহমেদ রাফি, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান সহ অন্যান্যরা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিক গণদের একাংশ উপস্থিত ছিলেন ।
উক্ত সংবাদ সন্মেলনে জানানো হয় যে, সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রথম পর্যায়ে ৭৯৬ টি এবং ২য় পর্যায়ে ৪৮১ টি, ৩য় পর্যায়ে ৮৩৮ টি এবং ৪র্থ পর্যায়ে ১ম ধাপে ৫৫৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুর্নবাসন করা হয়েছে। এছাড়াও ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে এ জেলার শাহজাদপুর, তাড়াশ, কামারখন্দ, বেলকুচি এবং চৌহালী উপজেলায় আরও ২৫৫ টি গৃহ আগামী ৯ আগষ্ট-২০২৩ তারিখ সকাল সাড়ে ৯ টায় দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করবেন।
ইতিমধ্যে এ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর,রায়গঞ্জ, কাজিপুর এবং উল্লাপাড়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং ০৯-০৮-২০২৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের মাধ্যমে আরও ০৩ টি উপজেলাকে ( শাহজাদপুর,তাড়াশ ও কামারখন্দ) ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
এছাড়াও চলতি অর্থ বছরে এ জেলায় আরও ২১৮ টি (বেলকুচিতে ৬৭টি এবং চৌহালীতে ১৫১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের মাধ্যমে এজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলে জানা যায়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন ছিল বাংলার গরীব-দুঃখী নিরন্ন মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার। এ লক্ষ্যে তিনি অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি সংবিধানের ১৫ (ক) অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে লক্ষ্মীপুর) চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং গৃহহীন মানুষের গৃহ নির্মাণের নির্দেশ প্রদান করেন।
এছাড়া ০৩ জুন ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সমবায় সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।” এভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশে গৃহহীন মানুষের দুর্দশা লাঘবে তাদের পুনর্বাসনের মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁরই নির্দেশে শুরু হয় গৃহহীন পুনর্বাসন কার্যক্রম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ১৯৯৭ সালের ২০ মে কক্সবাজার জেলার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা দেখতে কক্সবাজার পরিদর্শন করেন এবং গৃহহীন মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ প্রদান করেন। তাঁর নির্দেশনায় শুরু হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৫,৫৪,৫৯৭ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
Leave a Reply