এইচএম মোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জে অন্যের জমি দখল করে রাস্তা নির্মান এবং বিষয়টি নিয়ে শালিসী বৈঠক করার কারণে গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করায় এর প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শাহেদনগর গ্রামবাসী সংবাদ সম্মেলন করেছে।
শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে শাহেদনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে শাহেদ নগর গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলনে গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি জিন্নত আলী সরকারের সভাপতিত্বে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির
কোষাধ্য সাইফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের ২১ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের কথা পত্রিকায় ”ভোগান্তিতে কয়েক পরিবার “দখলের উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে পাকা রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল নির্মান” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন। প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, শাহেদ নগর গ্রামের গোলবার হোসেনের বড় ভাই মনির হোসেন তার বাড়ীর সীমানায় ঘর নির্মাণের প্রস্ততির সময় প্রতিবেশী মো. তাজ উদ্দিন ও পিয়ারী বেগম বাধা প্রদান করে। উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে নির্দিষ্ট তারিখে ৫টি বাড়ীর সরেজমিনে মাপ-জরিপ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। নির্দিষ্ট তারিখে জরিপের সময় পিয়ারী বেগমের বাড়ী মাপার পর গোলবার হোসেন গংদের বাড়ী আমিন দ্বারা জরিপ করতে গেলে তারা বাধা দেয়। এ সময় অভিযোগকারীর ৫টি বাড়ীর মালিকদের সাথে তাদের ঝগড়া শুরু হয়। জরিপ কাজে গোলবার আলী গং কেন বাঁধা দিচ্ছে গ্রামের লোক বিষয়টি জানতে চাইলে তাদের সাথেও গোলবার হোসেন গং অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করে। পরিস্থিতি নিরসনে জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের মাতব্বরগণ মাপ জরিপের উদ্যোগ নিতে গেলে গোলবার হোসেনের স্ত্রী তাদের বাড়ীর গেট বন্ধ করে দেয়। ফলে অভিযোগকারীদের একটি পক্ষ মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে যাদের বাড়ীর জায়গা জোরপূর্বক দখল করে গোলবার হোসেনগং যাতায়াত করতো। তারা সাময়িকভাবে টিন দিয়ে ওই রাস্তা বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি নিরসন করার লক্ষ্যে গোলবার হোসেন গং ও তাদের বাড়ীর পাশের মালিকদেরসহ গ্রামের জনসাধারণ উপস্থিতিতে মসজিদ প্রাঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়। সেখানে সিরাজগঞ্জ সদর থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ ইন্সেপেক্টরের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের শুনানী শেষে আলোচনা সভায় সিদ্ধান্ত হয় যেহেতু রাস্তার সাথে গোলবার হোসেনের নিজস্ব ক্রয়কৃত জায়গা রয়েছে। ওই জায়গা দিয়ে রাস্তা বের করে চলাচলের জন্য সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। গোলবার হোসেন গং মাতব্বরদের নিকট ১ মাস সময় প্রার্থনা করলে তা মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু তিন/চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও গোলবার হোসেন গং পূর্বের দখলকৃত রাস্তা দিয়েই চলাচল অব্যাহত রেখে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করে। ওই অভিযোগটি তদন্তে আসেন সিরাজগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সরেজমিনে তদন্ত এসে অভিযোগকারীদের বসতবাড়ীর দলিল ও কাগজপত্র থানায় জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। সেই প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মনোনীত এ্যাডভোকেট দ্বারা স্ব-স্ব বাড়ীর মালিকের অংশ নির্ধারণ করে প্রত্যেকের বাড়ীর জায়গা আমিন দ্বারা মাপ জরিপ করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষিতে মরহুম আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে রাকিব ভূঁইয়ার বাড়ীর জায়গা গোলবার হোসেনগং জোরপূর্বক রাস্তার জন্য দখল করে রেখেছেন। শুধু ওই জমির অংশ মাপ জরিপ করে। কিন্তু গোলবার হোসেনগং এর বাড়ী মাপ জরিপ করিতে গেলে পুনরায় বাধার সৃষ্টি করেন। যার জন্য আশপাশের বাড়ীর মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। বর্তমান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুনরায় গ্রামে উভয় পক্ষের মাতব্বরদের তলব করে অভিযোগকারী ৫টি বাড়ীসহ গোলবার হোসেন গংদের বাড়ী মাপ জরিপ করার জন্য নির্দেশ দেন। ওসি সাহেবের নির্দেশে শাহেদ নগর সরকারী প্রাঃ বিঃ প্রাঙ্গনে সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর, ওই গ্রামের পঞ্চায়েতের মাতব্বরসহ উভয়পক্ষের উকিলের উপস্থিতিতে ১ম দিনে আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার বাড়ী মাপ জরিপ করা হয়। এরপর সময় স্বল্পতার কারণে পরের দিন সবার বাড়ী মাপ জরিপের জন্য সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পরের দিন গোলবার হোসেন গং অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে তাদের মনোনীত মাতব্বরদের মধ্যে মো. আব্দুর রহিম সরকারকে অনুপস্থিতির কারণ জিজ্ঞাসা করিলে তিনি পরবর্তী সপ্তাহে সকলের বাড়ী মাপ-জরিপ করা হবে বলে সিন্ধান্ত দেন। কিন্তু পরবর্তীতে মাপ জরিপ না করে কোন মাতব্বর ও কাউন্সিলরদের সাথে পরামর্শ না করে গোলবার হোসেন গংদের প্ররোচনায় মো. আব্দুর রহিম সরকার মিথ্যা শালিস নামা তৈরি করে দেন। এদিকে ওই শালিসনামা তৈরির পর গোলবার হোসেন গং পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ দায়ের করেন।উল্লেখিত অভিযোগ পুলিশী তদন্তে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। হাজী আব্দুস সালাম বলেন, গত ১৫ অক্টোবর হইতে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত আমি
ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলাম। অথচ গত ২১অক্টোবর স্থানীয় একটি পত্রিকায় ভূমি দস্যু প্রতারক গোলবার হোসেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে। এতে সমাজে মান-সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি মিথ্যা, ভিত্তিহীন সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং আসল রহস্য উৎঘাটন করে গোলবার হোসেন গংদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। এ সময় শাহেদনগর গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সহ-সভাপতি তারাজুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন, উপদেষ্টা রেজাউল করিম রেজা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন মাহমুদ, সমাজকল্যান সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কোষাধক্ষ্য সাইফুল ইসলাম, উপদেষ্টা আরমান বেপারী, সদস্য রানা, নীল মিয়া ও মিলনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
Hide quoted text
Leave a Reply