সেলিম তালুকদার ,শাহজাদপুর প্রতিনিধি : নানা বিতর্ক এবং নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বহুল আলোচিত শাহজাদপুর তাঁত বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে এনামুল হাসান মোজমাল স্মৃতি নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ২০২৩।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বিকেল চারটায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর শহরের করতোয়া নদীতে এ মৌসুমের ফাইনাল বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু বাইচে অংশ গ্রহনকারী একাধিক নৌকার পরিচালক এবং বাইচালরা আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি শেষ মূহুর্তে আয়োজকদের চাপিয়ে দেয়া সিন্ধান্ত মেনে না নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা আসরের অন্যতম সেরা নৌকা “স্বপ্নের তরী” ভাইমারা ফাইনাল বর্জন করায় দর্শকদের মাঝে দেখা গেছে চরম অসন্তুষ্টি।
পদ্মা এক্সপ্রেস চিনাধুকুরিয়া, আল মদিনা এক্সপ্রেস চিনাধুকুরিয়া এবং স্বপ্নের তরী ভাইমারা নৌকার প্রতিনিধিরা আয়োজকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, বাইচের শুরু থেকেই ‘নলুয়া একতা চ্যালেঞ্জার’ নামক নৌকাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য নানা কৌশলের আশ্রয় নেন আয়োজকরা।
“নলুয়া একতা চ্যালেঞ্জার” নৌকাটিকে শুরু থেকেই বড় বড় নৌকার সাথে প্রতিযোগিতায় না দিয়ে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের সাথে বাইচের সুযোগ করে দেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক “স্বপ্নের তরী” ভাইমারা নৌকার একজন পরিচালক জানান, “আমাদেরকে কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, “স্বপ্নের তরী” ভাইমারা, “নিউ উড়ন্ত বলাকা” বনগ্রাম এবং “নলুয়া একতা চ্যালেঞ্জার” এই তিনটি নৌকা পয়েন্টের ভিত্তিতে একসাথে ফাইনাল টান দিবে। কিন্তু “নলুয়া একতা চ্যালেঞ্জারকে” সুবিধা দেয়ার জন্য হঠাৎ করে আমাদেরকে কম পয়েন্ট পাওয়া “পদ্মা এক্সপ্রেস” চিনাধুকুরিয়ার সাথে প্রতিযোগিতা করতে বলেন। যেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বিধায় আমরা ফাইনাল বর্জন করেছি।”
“পদ্মা এক্সপ্রেস” চিনাধুকুরিয়ার পরিচালক হাবিবুর রহমান তারা (তারা মেম্বর) জানান, নৌকাবাইচ কর্তৃপক্ষের সকল সিদ্ধান্ত মেনে বাইচে অংশ গ্রহণ করে তারা ৩য় হন। ঘোষণা অনুযায়ী পুরস্কার হিসেবে তাদের একটি ষাঁড় গরু দেয়ার কথা থাকলেও তারা হঠাৎ করে তাদের গরুর পরিবর্তে ফ্রিজ দেয়ার অফার করেন।
পরে নৌকার পরিচালকবৃন্দ, বাইচাল এবং সমর্থকরা রাতে “তাত বস্ত্র মালিক সমিতির” অফিস ঘেরাও করেন। তাদের অনড় অবস্থানের কারনে এবং পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদীর মধ্যস্থতায় অবশেষে কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুত পুরস্কার ষাঁড় গরু দিতে বাধ্য হন।
তিনিও “নলুয়া একতা চ্যালেঞ্জারের” পক্ষে কর্তৃপক্ষের বিশেষ পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ই সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া শাহজাদপুরের এ নৌকা বাইচ দেখতে প্রতিটি বাইচেই হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। কিন্তু ফাইনালে এসে তারা প্রিয় নৌকার বাইচ দেখতে না পেরে হতাশ হয়েছেন।
ইতিপূর্বেও কচুরিপানার দোহাই দিয়ে ফাইনাল চলাকালীন শেষ মুহুর্তে এসে হঠাৎ করে ফাইনাল স্থগিত করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। সেসময় একাধিক নৌকার পক্ষ থেকে বিষয়টিকে সন্দেহজনক বলে মন্তব্য করা হয়েছিল।
আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য শাহজাদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আল মাহমুদ উত্থাপিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কর্তৃপক্ষ নিয়মানুযায়ী বাইচ পরিচালনা করেছেন। এখানে কোন পক্ষপাতিত্বের প্রশ্নই ওঠেনা।
Leave a Reply