আলী আশরাফ, সিরাজগঞ্জ : নেই কোন সরকারি ইজারা। তবু দেদাচ্ছে ৩টি ড্রেজার দিয়ে দিনরাত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। একদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, অন্যদিকে শাহজাদপুরের যমুনা নদীর তীরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। বালু উত্তোলনের ফলে গত কয়েক দিনে শাহজাদপুরের বেনুটিয়া, কাশিপুর, ব্রাহ্মনগ্রাম, আরকান্দি, বাঐখোলা এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। ভাঙ্গনের মুখে অনেকে সরিয়ে নিচ্ছে বসতঘর।
(২৮ মে ২০২৩), রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী বেনুটিয়া ও কাশিপুর গ্রামে অনামিকা, তায়িম ও আন্নাফী লোড ড্রেজার বসিয়ে ভাল্কহেডের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। প্রায় ২০ ভাল্কহেডে মাধ্যমে বালু চলে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ, আরিচা, চাঁদপুরে বিভিন্ন পয়েন্টে। তবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশে ২ টি বাংলা ড্রেজার দিয়ে পাইপের সাহায্যে নদীর তীরে বালু স্তুপ করা হচ্ছে।
এবিষয়ে কাশিপুর ও বেনুটিয়া গ্রাম বাসীর পক্ষ থেকে গত ২২মে ২০২৩ইং তারিখে সাইদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। অভিযোগের কপিটি ভূমি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে প্রেরন করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীতে সরকারীভাবে কোন বালুমহল ইজারা না হওয়া স্বত্বেও কিছু চিহ্নিত বালু দস্যূ মান্নান, হিরক, নাসির, সবুজ, সজীব ও আনিস ড্রেজার বসিয়ে ভাল্কহেডের মাধ্যমে দিনে ও রাতে বেনুটিয়া ও কাশিপুরে বালু উত্তোলন করে আসছে।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, বালু খেকোদের বারবার নিষেধ করার পরেও নৌপুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা স্বত্ত্বেও বালুখেকোরা তা কর্ণপাত না করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বেনুটিয়া ও কাশিপুর গ্রামের ফসলী জমি, বসতবাড়ী, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, পাকা রাস্তা ও সরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলমান থাকলে এলাকাবাসী সর্বশান্ত হয়ে পথে বসিবে।
টাঙ্গাইল নৌপুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে নৌ পুলিশ পৌছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে
শাহজাদপুরের সহকারি কমিশনার ( ভূমি) লিয়াকত সালমান বলেন, শাহজাদপুরের যমুনা নদীতে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। অভিযোগের আলোকে বেনুটিয়া ও কাশিপুরে পরিদর্শন করেছি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের জন্য বালু উত্তোলন হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, কাগজপত্র না থাকলে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু উত্তোলন করতে পারবে না। বিষয়টি আমি দেখতেছি।
Leave a Reply