নজরুল ইসলাম:
বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য চাষ ও লেয়ার ব্রয়লার সোনালী মুরগী ব্যবসার পাশাপাশি এবার
আরো বড় পরিসরে গরুর ফার্ম দিতে যাচ্ছেন রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ সফল উদ্যোক্তা মাহফুজ-উর-রহমান। ইতিমধ্যে তিনি গরু পালনের জায়গা সংস্কার করে ঘর ও শেড তৈরী করেছেন।
উদ্যোক্তা মাহফুজ-উর-রহমান রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ সফল আত্মকর্মী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বহস্তে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সদস্য, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখা ও শিয়ালকোল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি ১৯৮৮সালের ৫ ফেব্রুয়ারী সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড শ্যামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
২০০৪ সালে শ্যামপুর কাজী ইসমাইল হোসেন দাখিল মাদ্রাসা হতে দাখিল, ২০০৬ সালে আলিম ও ২০১০ সালে ফাজিল পাশ করেন।
উদ্যোক্তা মাহফুজ উর-রহমান বলেন, আমাদের পারিবারিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। জমিতে ফসল ফালিয়ে চাষাবাদ করে কোন রকম দিন চলতো। ওই সময় পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ইচ্ছে থাকা সত্বেও অভাবের সংসারে উচ্চতর পড়ালেখা করা সম্ভব হয়নি। সাংসারিক অভাব দূর ও বেকারমুক্ত হওয়ার জন্য অন্যের প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হয়েছে দিনের পর দিন। দীর্ঘদিন কাজ করার পর স্থানীয় এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ীর সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে । তার ঔষধের দোকানে লোকের প্রয়োজন হওয়ায় সামন্য বেতন নিয় কর্মচারী হয় চাকুরি করতাম। সে সময় আমার স্বভাব চরিত্র ও ব্যবসায় মনোযোগী দেখে প্রতিষ্ঠানের সকল দায়িত্ব বুঝে দিয়ে অন্য ব্যবসা করতেন দোকানের মালিক এস, এম ফরিদ। এভাবে চলতে থাকে প্রায় ৭-৮ বছর। তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে বন্ধুদের পরামর্শে সিরাজগঞ্জ জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হতে এক মাস মেয়াদী ‘মৎস্য চাষ’ বিষয়ক ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নিজের ফেলে রাখা পুকুরটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেই। পুকুর মেরামতে মাত্র চল্লিশ হাজার টাকা যুব উন্নয়ন থেকে ঋণ গ্রহণ করি পুকুরে মাছ চাষ শুরু করি। পুকুর পাড় ও নিজ বাড়ীর খালি জায়গায় ৪ হাজার লেয়ার মুরগি, ৩৫০টি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা নিয়ে পোল্ট্রি খামার গড়ে তুলি। ব্যবসার সফলতা দেখে ও যুব উন্নয়নের পরামর্শে আরো দেড় লাখ টাকা যুব ঋণ গ্রহণ করি। পরবর্তীতে ওই প্রকল্প গুলোর লাভের টাকা থেকে ঋণ পরিশোধ করি।
বর্তমানে পুকুরের জাযগা ও খামারের আকার বড় করা হযেছে। নতুন নতুন প্রকল্প ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছি। প্রায় ১০ বিঘা পৃকুরে
বিভিন্ন জাতের দেশি-বিদেশি মাছের চাষবাদ হয।
এদিকে তিনি সরকারের ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ রুপান্তরিত করার পাশাপাশি তার খামারগুলো ডিজিটাল মৎস্য খামার, ডিজিটাল পোল্ট্রি খামার, ডিজিটাল এগ্রো ফার্ম নাম দিয়ে নামকরন করেছে। ব্যবসায় লাভের টাকা দিয়ে এলাকায় স্থানীয় বাজারে অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করে দ্বিতল ভবনের দুটি ফার্মেসির দোকান করেছে ও কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন নিজ এলাকায়।
মাহফুজ-উর-রহমানের খামারে বর্তমান ৯ জন স্থায়ীভাবে মজুরীভিত্তিক কর্মচারী রয়েছে। তাঁর প্রকল্পের বর্তমান মূলধন প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা । প্রকল্পের বার্ষিক নীট আয় প্রায় অর্ধকোটি টাকা।
একজন সফল আত্মকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিকট চির কৃতজ্ঞ জানান।
কর্মসংস্থান সৃজন ও আত্মকর্মসংস্থানে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মাহফুজ -উর-রহমানকে ২০১৯ সালে রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে ভূষিত করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Leave a Reply