আলী আশরাফ,সিরাজগঞ্জঃ
১০টি টিসিবির কার্ডের পণ্য ও ৪০দিনের ২০জন শ্রমিকের কর্মসৃজন কাজের টাকা চেয়ারম্যান গিলে ফেলেছে। সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ২ কিস্তির ১০টি টিসিবির কার্ডের পণ্য ও ৪০দিনের শ্রমিকের কর্মসৃজন কাজের টাকা চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে উত্তোলন ভোগ করেছেন। ১০জন টিসিবির পণ্যের গ্রাহকরা ইউনিয়ন পরিষদের সম্মুখের কার্ডের প্রমানপত্র নিয়ে বিক্ষোভ করলেও চেয়ারম্যানেরা সমর্থকরা বঞ্চিত কার্ডধারীদের নানান রকম ভয়ভীতি ও লাঞ্ছিত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে।
সরেজমিনে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২৩ ও ২৪ জুলাই ২০২৩ইং তারিখে ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নে পরিষদে ৩ হাজার ৮০ জনকে টিসিবির পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করেন ডিলার। ইউনিয়নের বানিয়াগাঁতী গ্রামের ইউসুফ আলী মেয়ে মিনারা খাতুন, আবু সাইদ মন্ডলের মেয়ে আন্না খাতুন, বাবুল হোসেন স্ত্রী সপনা খাতুন সহ ১০জন কার্ডধারী টিসিবির পণ্য উত্তোলন করতে আসেন। কিন্তু তাদের কাছে টিসিবির পরিবার পরিচিতি কার্ড না থাকায় তাদের টিসিবির পণ্য দেয়নি ডিলার। টিসিবির পণ্য না পাওয়া ১০জন্য ভ’ক্তভোগী বলেন, ২ কিস্তির পণ্য দেওয়ার পূর্বে ডিলার নুরুল ইসলাম এর সময় চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম এর নির্দেশ নতুন টিসিবির পরিবার পরিচিতি কার্ড দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টিসিবির কার্ড নিয়ে নেয়। এর পর টিসিবির পণ্য দেওয়ার পরিবার পরিচিতি কার্ড আর আমাদের দেওয়া হয়নি। পরিবার পরিচিতি কার্ড না থাকায় ডিলার আমাদের টিসিবির পণ্য দিচ্ছে না। পরিবার পরিচিতি কার্ড এর জন্য কোথায় যাব আমরা বুঝতে পারছি না। পরিবার পরিচিতি কার্ডের জন্য জহুরুল চেয়ারম্যানের কাছে বারবার গেলেও সে আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছে।
প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর কাদের তালুকদার বলেন, বানিয়াগাঁতী গ্রামের ১০জন ব্যক্তি পূর্বে থেকে টিসিবির পণ্য পেয়ে আসছে। ডিজিটাল পরিবার পরিচিতি কার্ড করার পর ২ কিস্তির টিসিবির পণ্য পায়নি। পরিবার পরিচিত কার্ড নং- ১১৩০ থেকে ১১৩৯ এই নম্বরগুলো অভিযোগকারীদের। কিন্তু তাদের হাতে পরিবার পরিচিতি কার্ড না থাকার কারণে টিসিবির পণ্য পাচ্ছে না। তবে কি কারণে তারা ১০ জন টিসিবির পণ্য পাচ্ছে না আমি বলতে পারব না।
ইউপি সচিব আবু শাহীন মোল্লা বলেন, অজ্ঞাত কারণে ১০জনকে পরিবার পরিচিতি কার্ড দেওয়া হয়নি। তাদের কার্ড নম্বর আমার কাছে আছে। চেয়ারম্যান সাহেবের কথা বলে টিসিবির পরিবার পরিচিতি কার্ড দিব।
এবিষয়ে ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি মোবাইলের কল রিসিভ করেনি।
অপরদিকে উত্তর বানিয়াগাঁতী গ্রামের মৃত আকতার হোসেন এর পুত্র রফিকুল ইসলাম, আমিরুল ইসলামের স্ত্রী পারভীন বেগম, মৃত শাহজাহান আরী পুত্র মো: চান মিয়া, রাজু সরকারের স্ত্রী খোদেজা খাতুন, ইসমাইল প্রামানিকের পুত্র আমিরুল ইসলাম, মৃত মোহাম্মদ আলী সরকার পুত্র নুর ইসলাম সরকার, মৃত কাদের মন্ডলের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম বুদ্দু, ইউসুফ আলীর পুত্র মায়া খাতুন, আবু সাইদ মোল্লার পুত্র সাইফুল ইসলাম, রমজান আলী মন্ডলের পুত্র মজনু মন্ডল, আলতাফ হোসেন খান এর পুত্র মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, রাজ্জাক খান এর পুত্র জুবায়েল খান, ময়নাল হক আকন্দ এর স্ত্রী রিপা খাতুন, বদিউজ্জামানের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন, আতিয়ার রহমানের পুত্র মোশাররফ, আলতাফ হোসেন খান এর পুত্র নুর ইসলাম, হাকিম সরকার পুত্র সাইফুল ইসলাম, রুস্তম আলী পুত্র সোহরাপ আলী খান, আব্দুল মান্নান খান এর পুত্র শরিফুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন এর পুত্র গফুর খানসহ ২০জন কর্মসৃজনের মোবাইল নাম্বার সহ দেওয়া কার্ড থাকলে তাদের বিকাশ নাম্বারে কোন টাকা পৌছায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, ৪০দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজের কোন বাকী নেই। স্ব স্ব বিকাশ নাম্বারে টাকা পৌছে গেছে।
উত্তর বানিয়াগাঁতীর ২০জন কর্মসৃজনের শ্রমিক বলছে, জহুরুল চেয়ারম্যান আমাদের বিকাশ নাম্বার পরিবর্তন নিজের তৈরী বিকাশ নাম্বার দিয়েছে। সেই বিকাশ নাম্বারে টাকা পৌছেছে।
Leave a Reply