নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটিতে পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে রাঙ্গালিয়াগাঁতী সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে। ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের পর জোর পূর্বক জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে স্কুল শিক্ষক আব্দুস সোবহান পলাতক রয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষক সরওয়ার জাহান বলেছেন পারিবারিক সমস্যার কারনে তিনি ছুটিতে আছেন। স্কুল পরিচালনা কমিটি ও এলাকার মাতব্বররা বিষয়টি মিমাংসার উদ্ব্যোগ নেয়ায় মামলা করতে পারেনি শিশুটির পরিবার।
ধর্ষনের শিকার স্কুল ছাত্রীর ভাই গত ৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি লিখিত আকারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস.এম আব্দুর রহমান অভিযোগ পত্রটি হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন।
স্কুল ছাত্রীর পরিবার জানায়, স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলে রান্না করে খাবার খায়। আর এই রান্নার কাজে সহযোগিতা করার জন্য পঞ্চম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে ব্যবহার করতো সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান। গত সোমবার রান্না করার জন্য মাছ কেটে হাত পরিস্কার করছিলো ওই স্কুল ছাত্রী। এসময় সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান একটি শ্রেণী কক্ষে ডেকে নিয়ে স্কুল ছাত্রীকে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। এসময় স্কুল ছাত্রী চিৎকার করলেও শিক্ষকের হাত থেকে রক্ষা পায়নি সে। ধর্ষন শেষে স্কুল ছাত্রীর জোর পূর্বক জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়। স্কুল ছাত্রী জন্মনিয়ন্ত্র বড়ি খেতে না চাইলে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
পরে জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি খেতে বলে ১শ টাকা হাতে দিয়ে স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় শিক্ষক আব্দুসসোবহান। পরে স্কুল ছাত্রী ঘটনাটি তার পরিবার জানালে বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনা এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী মাতাব্বর ও স্কুল পরিচালনা কমিটি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মিমাংসার উদ্যোগ নেয়ার কারনে ঘটনাটি পুলিশকে জানাতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্কুল ছাত্রীর পরিবার।
স্থানীয় ইউসুব আলী বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এধরনের ঘটনা ঘটেনি। একজন শিক্ষক হয়ে এধরনের কাজ করতে পারেন তা কেউ ভাবেনি। এঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে পরবর্তীতে এধরনের কাজ কেউ না করতে পারে।অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান, আমার বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের অভিযোগ সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন,শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকার মাতব্বরদের নিয়ে একটি মিটিং ডেকেছি। শিক্ষক দোষি কি দোষি না আমরা তা উদঘাটন করতে পানি নাই। স্কুল ছাত্রীর পরিবারের দাবী শিক্ষক অভিযুক্ত আর শিক্ষক বলেছেন তিনি অভিযুক্ত নন।
আমরা মিটিং করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। প্রধান শিক্ষক সরওয়ার জাহান বলেন, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনেরঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়েছে। স্কুলম্যানেজিং কমিটির এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান ইতিপুর্বে বড় ভাবীর সাথে অনৈতিককাজে লিপ্ত থাকার কারনে তাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় মাতব্বর জানান।একাধিক সুত্রে জানা যায়- প্রধান শিক্ষক স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতার নিকটতম আত্বীয় হিসাবে তদবিরের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। স্কুল ছাত্রীর পরিবারকে মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়েছি। মামলা দায়ের হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply