সামিউল হক শামীম, তাড়াশ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে গরু চুরির উপদ্রব। গত চার মাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৩৭টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও প্রায়ই গরু চুরি কিংবা কোন না কোন চুরির ঘটনা ঘটছেই। এতে উপজেলা জুড়েই জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। যদিও এসব ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে চোরদের গ্রেফতারের জন্য নেওয়া হয়েছে চিরুনী অভিযান। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশের সদস্যসংখ্যা কম থাকায় এসব ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে।
তাই বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামের উদ্যোগে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বার গুলোতে লাঠি, বাঁশি, বল্লম নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। অপরিচিত ও সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই তাকে আটক করে থানার ওসি ও দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাকে জানাচ্ছেন গ্রামবাসী।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামবাসীরা রাত জেগে পাহারা দেওয়া শুরু করেছেন। এরপর একে একে বোয়ালিয়া, বিদি মাগুড়া, শ্রীকৃষ্ণপুর, মাধবপুর, বৃ-পাচানসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামে রাত জেগে পাহারা দেওয়া শুরু করবে বলে জানান, তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. আখতার হোসেন।
একইভাবে তালম, দেশীগ্রাম, মাধাইনগর, বারুহাস সগুনা, মাগুড়াবিনোদ ও নওগাঁ ইউনিয়নের গ্রামগুলোতেও রাত জেগে পাহারা দেওয়া শুরু করবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, গরু চুরির তদন্ত চলছে। আর ওই গ্রাম গুলো উপজেলার সিমান্ত এলাকা হওয়ায় চোরেরা খুব সহজেই মাঠের মধ্যে দিয়ে গরু নিয়ে পালাচ্ছে। তাই প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের স্থানীয় ভাবে এলাকায় পাহাড়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ করা হয়েছে। মূলত জনগণকে সম্পৃক্ত করে পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নে থানা পুলিশের আয়োজনে বিটপুলিশিং ও মতবিনিময় সভা চলমান আছে। চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাহারার কারণে অপরাদীরা যদি ঢুকতেই না পারে, তাহলে অপরাধও হবে না, আর অপরাধীরা ঢুকলেও বের হতে পারবে না। এ ছাড়া গ্রামবাসীর পাশাপাশি পুলিশের প্যাট্রল টিমও টহলে রয়েছে। উপজেলার সকল ইউনিয়নগুলোতে পাড়ায় মহল্লায় পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বারে রাত জেগে পাহারার জন্য গ্রামবাসীকে উদ্বুদ্ধ করছি। পাহাড়া ঠিকমত হচ্ছে কি না, সেটি রাতে ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পুলিশ ও জনগণের যৌথ উদ্যোগে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবেই।
Leave a Reply