সামিউল হক শামীম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অপহৃত মারুফ হাসান (১২) হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামী কাওসার হোসেন (১৯) কে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘাতক মো. কাওসার হোসেন উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের ঝুরঝুরি গ্রামের মো. সাইদুর রহমানের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ বেসরকারি আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের টেক্সটাইল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) জুম্মা নামাজে শুধুমাত্র ফরজ নামাজ আদায় করে। এ সময় ঘাতক কাওসার কৌশলে মারুফ কে মসজিদ থেকে বেড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই দিনেই মারুফ হাসানের বাবা মো. মোশারফ হোসেন ছেলেকে নানা স্থানে খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে তাড়াশ থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর থেকেই থানা পুলিশ, র্যাব-১২ সহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রযুক্তির সহায়তায় মারুফকে উদ্ধারের জন্য তৎপরতা চালাতে থাকেন। এরই ধারবাহিকতায় চাঁদ রাতে অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে র্যাব-১২ একটি দল কাওসার হোসেনসহ পাঁচজন কে আটক করেন।
আর আটকের পর জিজ্ঞসাবাদে ঘাতক কাওসার অপহৃত মারুফ হাসানের মরদেহের অবস্থান জানায়। এরপর ঈদের দিন সকালে মারুফের বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দুরে অবস্থিত ঝুড়ঝুড়ি বাজারের তালুকদার মার্কেটের একটি সেপটি ট্যাংক থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা তার মরদেহ উদ্ধার করেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওইদিনই সিরাজগঞ্জ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মারুফ হাসান অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় কাওসার হোসেনকে আসামী করে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মারুফের বাবা মোশারফ হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একজনকে আসামী করে মামলা করেন। ওই আসামী কাওসারকে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে সিরাজগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ দিকে আজ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে মারুফের মরদেহবাহী এ্যাম্বুলেন্স ঝুরঝুরি বাজার এলাকায় পৌঁছিলে মারুফের মা, বাবা, বোন ও আত্মীয় স্বজনসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ আহাজারি করতে থাকেন।
এ সময় বিশেষ করে একমাত্র ছেলে হারানো মা মোছা. চাঁদ সুলতানা আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আত্মীয় হয়ে কাওসার আমার যে সর্বনাশ করেছে। আমি তার ফাঁসি চাই। আর আমার মতো আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয় এ কথা বলেই তিনি আবারো ঢুকরে কেঁদে উঠেন। পাশাপাশি মারুফের বাবা মোশারফ হোসেন ছেলে হারিয়ে নির্বাক হয়ে বসে ছিলেন ছেলের লাশের পাশে।
Leave a Reply