শামিউল হক শামীম, তাড়াশ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম আদারপাড়া গ্রামে সরকারী পুকুরে মাছ ধরা কে কেন্দ্র করে পুলিশে উপর হামলা হয়েছে। এ সময় একটি বিবদমান পক্ষ ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটার উপর্যুপরি আক্রমনে পুলিশ সদস্যরা পিছু হটে পার্শ্ববতীর্ বাজারে আশ্রয় নেয়।
এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদের সহায়তায় ছিনিয়ে নেয়া রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রাতেই পুলিশ আটজন কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
তাড়াশ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) দেবব্রত কুমার বাদী হয়ে সাতজন কে গ্রেফতার ও ১০ জন পলাতক সহ আরো ১৫/২০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি কে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, হাজী সেরাজ, জমশেদ, মোকসেদ, নুরুজ্জামান, সোলায়মান আলী, মানচু বেগম ও জাহানারা খাতুন।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলার তালম ইউনিয়নের তালম আদারপাড়া গ্রামে নাগার পুকুর নামে একটি জলাশয় মৎস্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে লীজ নিয়ে মাছ চাষ করেন স্থানীয় সুফলভোগীরা। এসব সুফল ভোগীদের মধ্যে সম্প্রতি আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে খয়বর গ্রুপের সাথে হাজী সেরাজের গ্রুপের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিক সালিশ দরবারও হয়। কিন্তু ঘটনাটি মিমাংসা না হওয়ায় উভয় পক্ষই ওই পুকুরে পোনা মাছ ছেড়ে দেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) ভোর আনুমানিক তিনটার সময় থানার ডিউটি অফিসার কে তালম পদ্মপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামীলীগ নেতা মো: আব্দুর রহিম ফোন করে পুকুরে মাছ ধারা নিয়ে সংঘর্ষের কথা জানায়। এ সময় ওই এলাকায় নাইট ডিউটিতে থাকা এসআই দেবব্রত কুমার সঙ্গীয় চারজন ফোর্স নিয়ে ভোর চারটার সময় ঘটনাস্থলে পৌঁচ্ছালে হাজী সেরাজের দল ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা করে।
এ ঘটানায় পুলিশ কনস্টেবল সনাতন কুমার ও ফিরোজ আহত হয়। তাদের কে উদ্ধার করে তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
পরে বিকেল ৫ টার দিকে পুলিশ বাদী হয়ে পুলিশের উপর হামলা করার অপরাধে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করে।
তালম ইউনিয়ন পরিষদের আট নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আব্দুল হামিদ বলেন, হামলার সময় পুলিশের একটি রাইেফেল ছিনতাই হয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ আসলে আমরা খোঁজাখুঁজি করে পুকুর পাড়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় অস্ত্রটি পাওয়া গেলে পুলিশ তা উদ্ধার করে।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনাটি অস্বীকার করে বলা হয়, শুধুমাত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লাপাড়া সার্কেলের এএসপি অমৃত সূত্রধর বলেন, পুলিশ ইতিমধ্যেই সাতজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে। অন্যদের গ্রেফতারের প্রস্তুতি চলছে।#
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৭.০৭.২০২৩ খ্রি:
তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।
Leave a Reply