আলী আশরাফ,সিরাজগঞ্জ:
নিয়োগ পরীক্ষায় চলাকালীন সময়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে দুই পরীক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরীক্ষা রুমেই পরীক্ষার্থী দড়ি নিয়ে ফাঁসিতে ঝুলতে গেলে আত্মহত্যা থেকে রক্ষা করেন তাড়াশ থানা পুলিশ। আসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী পরীক্ষার সময় বিষ পান করায় তাকে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়া জিয়া মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ও প্রার্থীদের আত্মহত্যা ঘটনা ও জনসাধারনের চাপে ডিজির প্রতিনিধি বাংলাদেশ মাদ্রসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ আবু নাইম নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে চলে যান।
(২১ জুলাই ২০২৩) সিরাজগঞ্জের তাড়াশের গোন্তা আলীম মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এঘটনা ঘটে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আলিম মাদ্রাসার অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া ও নৈশপ্রহরী পদে কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এই চার পদের বিপরীতে প্রার্থীরা আবেদন করেন। তবে গোপনে পছন্দের কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা গ্রহন করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান। পছন্দের প্রার্থীর নিকট থেকে টাকা গ্রহনের বিষয়টি অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে ওই মাদ্রাসার অফিস সহায়ক প্রার্থী জয় হোসেন ও আয়া পদের প্রার্থী ফাতেমা তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুল ইসলাম অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের জন্য নিয়োগ নিতে হলে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। সভাপতি ও অধ্যক্ষ জানায়, টাকা দিলে পরীক্ষার পূর্বেই প্রার্থীকে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। টাকা দিলে ওই পদে চাকরি মিলবে, টাকা না দিলে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ফেল করিয়ে দেওয়া হবে। যোগ্যতা দিয়ে নাকি চাকরি হয় না। টাকা দিলে আর কোনো যোগ্যতা লাগে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আসলাম নামের একজন প্রার্থী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষ পান করায় তাকে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়া জিয়া মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অপরদিকে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় আয়া পদে প্রার্থী ফাতেমা খাতুন পরীক্ষা হলরুমেই ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে যান। তাড়াশ থানা পুলিশ ফাঁসির দড়ি থেকে ফাতেমা খাতুনজে রক্ষা করে।
আয়া পদ প্রার্থী ফাতেমা খাতুন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বেই ২০২০ সালে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান আমার কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছে। নিয়োগের জন্য টাকা দেওয়ায় আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়েছে।
ফাতেমার নিকট থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান জানান, নিয়োগ-বাণিজ্যের বিষয়টি মিথ্যা। একটু ঝামেলার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
ডিজির প্রতিনিধি বাংলাদেশ মাদ্রসা শিক্ষ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ আবু নাইম বলেন, ঝামেলার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে চলে যাচ্ছি।
Leave a Reply