এনামুল হক,সিরাজগঞ্জঃ
ঘর দেওয়ার নামে অভিনব কায়দায় প্রতারনার ফাঁদ পেতে প্রায় ১’শ টি পরিবার কাছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। ইতিমধ্যে ২০টি বাড়ির সামনে ঘর নির্মানের জন্য ২হাজার করে ইট ও ফেলে রেখে দিয়েছেন। আগামী নভেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ঘর নির্মানের কাজ শুরু হবে বলে ভুক্তভোগীদের শান্তনা দিয়ে আসছেন প্রতারক চক্রটি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘরগুলো যাকাত ফান্ড থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে প্রতারক চক্রটি দ্রুত সটকে পড়েন।
ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা,বাগবাটি ও বহুলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের নওদাফুলকোচা গ্রামের মৃত আব্দুল গণির পুত্র জাতীয় মৎস্যজীবি সমিতির ছোনগাছা ইউনিয়ন শাখার সিনিয়র সহ -সভাপতি মো: সফর আলী, বাগবাটী ইউনিয়নের পেচিবাড়ী গ্রামের আজাদ মল্লিকের পুত্র শামীম হোসেন ও বহুলী ইউনিয়নের খাঁগা গ্রামের শাহজামাল সংঘবদ্ধ হয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় থেকে ছোনগাছা,বাগবাটি ও বহুলী ইউনিয়নের ১’শ পরিবারের জন্য ২লাখ টাকা মুল্যের ২০ হাত লম্বা একটি করে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। ঘর নিতে হলে অফিস খরচ বাবদ ৬৫হাজার টাকা দিতে হবে। সাধারন জনগনকে বোকা বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতারক চক্রটি ২০টি বাড়ির সামনে ২হাজার করে ইট ও ফেলে রেখে দেন। ইট আসছে অতিশীঘ্রই ঘর নির্মান কাজ শুরু হবে। ২০টি বাড়িতে ইট এসেছে, আরও আসছে এই দেখে ইউনিয়ের নওদাফুলকোচা গ্রামের ৬টি পরিবার, ভাটপিয়ারী গ্রামের ৫টি পরিবার, বহুলী ইউনিয়নের খাগা গ্রামের ৭টি পরিবার, বাগবাটি ইউনিয়ের পেঁচিবাড়ি গ্রামের ৬টি পরিবার প্রতারক চক্রের মুলহোতা সফর আলীর নিকট ৬০হাজার করে টাকা জমা দেন।
৬০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার পর ও এক মাস অতিবাহিত হলেও ইট না পেয়ে এক ভুক্তভোগি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনকে ঘর দেওয়ার ব্যাপারে সরনাপন্ন হলে তিনি ভুক্তভোগীকে জানান, আমাদের কাছে ঘর দেওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকল্প নেই। সেই ভুক্তভোগী পুনরায় প্রতারক চক্রের মুল হোতা সফর আলীর কাছে গেলে, তিনি বলেন, হেনরী আপা এই ঘরগুলো দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে বরাদ্ধ এনেছে। হেনরী আপার কাছে ভুক্তভোগীটি ঘরের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে, হেনরী ম্যাডাম বলেছে, এই ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। পরবর্তীতে ঐ ভুক্তভোগী সফর আলীর কাছে গেলে, সফর আলী ভুক্তভোগীকে জানান, আগামীকাল আপনার বাসায় ইট আসতেছে। আর এটা যাকাত ফান্ড থেকে দিচ্ছি। কাউকে কিছু বলবেন না।
প্রতারক চক্রের সদস্য শামীম বলেন, আমার হাত দিয়ে সফরকে ৬জনের টাকা তুলে দিয়েছি। ৬টি ঘরের।টাকা তুলে দেওয়ার জন্য আমার ঘর ফ্রি করে দেবে সফর আলী। তাই আমি ৫ জনের নিকট থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা তুলে দিয়েছি।
প্রতারক চক্রের অন্য সদস্য শাহজামাল বলেন, ছোনগাছা বাজারে আমি দীর্ঘদিন ধরে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করছি। সফর এসে বলল, বন্ধু তোমাকে ঘর নিয়ে দিচ্ছি, পরদিন দেখি আমার বাড়ির সামনে দুই গাড়ি ইট ফেলেছে। ইটগুলো দেখে আমার অনেক প্রতিবেশিরা সফরকে টাকা দিয়েছে।
প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য সফর আলী বলেন, যাকাতের ফান্ড থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে, আমি ২০জন লোকের কাছ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছি। ঘর দেওয়ার পর আরো ৩০ হাজার করে ২০টি পরিবার আমাকে টাকা দিবে। এখানে দোষের কি আছে। অনেকে টাকা দিতে আসছিল, ২০টির উপরে ঘর দিতে পারব না, বিধায়, আমি টাকা নেয়নি। তবে ১’শ পরিবার থেকে টাকা নেওয়া কথা সম্পুর্ন মিথ্যা।
Leave a Reply